এক বরষার দিনে হঠাৎ দেখা ইরাবতীর সঙ্গে

বৃষ্টি ভেজা (জুলাই ২০২২)

Rafiqul Islam
  • ১১৪
ঝিরঝিরিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে গত রাত থেকে।দীর্ঘ বর্ষার আলামত।অনবরত বৃষ্টির ছোঁয়ায় সমস্ত চরাচর ভিজে একাকার।চিরচেনা প্রকৃতির এই হঠাৎ বদল মনে বেশ অন্যরকম দোলা দেয় ।ভালো লাগে বর্ষার সদ্য স্নাত স্নিগ্ধ প্রকৃতি। ভালো লাগে আকাশ, খোলা মাঠ, জল টলমল পুকুর, ভেজা সবুজ ঘাস ও লতা পাতা।
এই সময় প্রকৃতিকে বেশি করে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে। মনের গতিপ্রকৃতিও কেমন যেন বদলে যায় ।কাব্যকথার জলছবিতে ভরে ওঠে।
আমার একলা জীবনে আমি প্রায় বেড়াতে বের হই প্রাকৃতিক এই নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করার মনোবাসনায় ।রাস্তায় গাড়ির চাপ থাকে কম,মোটামুটি জনশূন্য রাস্তাঘাট।ইচ্ছা মতো হেঁটে চলে এক অন্য রকম অনুভুতির প্রকাশ খেলা করে যায় মনের অলিন্দ জুড়ে।ভালো লাগলে সাথে থাকা ক্যামেরায় টুপটাপ ছবি তুলতে কখনো ভুল করিনা।চারপাশটা দেখি খুব নিবিড়ভাবে, ভেজা কাক,শালিক………
আজ মনে হলো কিছুদিন আগে কলেজপাড়ার দীঘিতে অনেক লাল শাপলা ফুটতে দেখেছিলাম।সেই ছবি তুললে কেমন হয় ।টুপটাপ জল গড়িয়ে পড়ছে পাতায় আর ফুলে ।সেই ছবি ফ্রেমে ধরার আশায় নানা ভাব কল্পনায় একটু বেখেয়ালই ছিলাম মনে হয়।হঠাৎ সড়গড় কথায় আমি চমকে উঠলাম।
-আরে তুই?এখানে এই বৃষ্টিতে কি করছিস।
প্রথমে বুঝতে পারলাম না সামনের মানুষটি কে? সে নারী নাকি পুরুষ। কারণ পুরোদস্তুর রেইনকোটে মোড়ানো মানুষটাকে সহসা ঠাওর করা আমার জন্য কিছুটা দুষ্কর মনে হলো্।অকস্মাৎ বিষ্ময়ে আমি কিছুটা নির্বাক তাকিয়ে রইলাম।
-কন্ঠটি আবার ঝনঝনিয়ে উঠলো,
-কিরে ভ্যবলা কান্তর মতো হাঁ করে তাকিয়ে আছিস কেন?চিনতে পারছিস নাে ?এত সহজে ভুলে গেলি আমায়?
হঠাৎ ধুলোর রাশি ঝড়ো হাওয়ার মতো উড়িয়ে নিয়ে গেল যেন স্মৃতিপটের উপর থেকে।নিজের অজান্তে মুখ ফুটে বেরিয়ে এলো,
-আরে ইরা তুই? এখানে? এখানে কি করে? কি করছিস?
-আরে বাবা এতো প্রশ্ন উত্তর একসাথে কি করে দেবো? তবে ভালো লাগছে তুই আমাকে চিনতে পেরেছিস্ দেখে।
-কি যে বলিস তোকে কি করে ভুলবো তবে তোকে তোর বর্তমান অবস্থায় চেনা কষ্ট । একেবারে চিকনি চামেলী হয়ে গেছিস তার উপরে রেইনকোট পড়ে অদ্ভুতুড়ে অবস্থা।তবে তোর বিখ্যাত কণ্ঠ আমাকে চিনতে সাহায্য করেছে।একেবারে মার্কা মারা হা হা হা।
-তারপর কেমন আছিস দোস্ত?
-ভালো বেশ ভালো ।তবে তুই এই শহরে ?দেখে একটু অবাক হচ্ছি।
-আছি তো অনেকদিন। আমার পোষ্টিং এখানেই।
শুনে বেশ অবাক হলেও ভালো লাগলো এতদিন বাদে ইরার দেখা পেয়ে।কথায় কথায় জানা হলো ,শোনা হলো অনেক কিছু।ইরা জানালো তার এখনো সংসার করা হয়নি নানা ব্যস্ততায়। আমি বেশ অবাক হলাম। সে আরো জানতে চাইলো চারুলতা,দীপা,আলেয়া সহ আরো অনেকের কথা ।আমি বললাম কারো সাথেই তেমন যোগাযোগ নাই।তবে ইরা চাইলে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়া যেতে পারে।একথা শুনে ইরার সেকী হাসি।
হাসতে হাসতে ইরা বললো
-আচ্ছা একসাথে এতোগুলো মেয়েকে কীভাবে তুই ম্যানেজ করতিস বলতো? এটা কিন্তু আমার কাছে এখনো সেইরকম রহস্যময় লাগে।তোর ওই বিশ্ব প্রেমিক ইমেজ হি হি হি।
আমি হেসে সপাটে মনের কথা বলে দিলাম গড়গড়িয়ে,আচ্ছা তুই যে একজন মেয়ে এতো ছেলে তোর মতো রুপসীর পিছনে লাইন লাগিয়ে ঘুরঘুর করতো,তোর জন্য ফিদা ছিলো ।এমনকি আমি পর্যন্ত। তুই কারো প্রেমে পড়লি না কেন?
হঠাৎ করে পরিবেশটা গম্ভীর হয়ে গেল যেন।ইরাবতীর চোখটা ছলছল করে উঠলো।সে আমার হাতের উপর হাতটা রেখে বলল,
-দেখা যখন হলো ,সব কথাই হবে।তুই কেমন আছিস অপূর্ব?
এমন আবেগঘন পরিবেশে আমার দুচোখ ভিজে গেলো যেন ঘোর বরষায়।মুখে কিছু না বললেও মনে মনে বললাম ।আমি ভালো নেই ইরাবতী । একটুও ভালো নেই।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

এবারের বিষয় " বৃষ্টি ভেজা" বহুদিন পরে বৃষ্টিভেজা কোন একদিনে অকস্মাৎ দেখা হয়ে প্রিয় মানুষটির সাথে..... সেই সব অনুভূতি নিয়ে আমার এই গল্পটি।

০৫ এপ্রিল - ২০১৯ গল্প/কবিতা: ৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪